Saturday, August 15, 2015

আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র হারালে, ভুল থাকলে অথবা নতুন করতে গেলে কি করবেন??? টিউনটি অবশ্যই দেখবেন।

জাতীয় পরিচয় পত্র হারিয়ে গেলে, ভুল থাকলে অথবা নতুন পরিচয়পত্র করতে গেলে কি করবেন?
এছাড়াও অনেককেই জাতীয় পরিচয়পত্রের বিভিন্ন ভুলভ্রান্তি নিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হয়। আবার যারা নতুন পরিচয়পত্র করতে চান তারাও এ বিষয়ে অনেকে অজ্ঞ। কিভাবে করব, কোথায় করব, কি কি লাগবে ইত্যাদি বিষয় জানেন না। আর এ সমস্যা সমাধানের জন্য কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করলে আশা করি সবাই উপকার পাবেন।

পরিচয়পত্রে নিজের নাম, পিতা, মাতা, স্বামী, স্ত্রী ও অভিভাবকের নাম, জন্মতারিখ, রক্তের গ্রুপ এবং ঠিকানা সংশোধন কিংবা বদল করতে হতে পারে। এ জন্য প্রার্থীকে সাদা কাগজে ‘ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন এবং জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানে সহায়তা প্রদান প্রকল্প’- এর পরিচালকেরকাছে আবেদন করতে হবে। এই আবেদন আগারগাঁওয়ের ইসলামিক ফাউন্ডেশন ভবনের সপ্তম তলায় প্রকল্প কার্যালয়ে পাওয়া ছক বা ফরমেও করা যায়।

ফরম পূরণ করে প্রকল্প কার্যালয়ের নির্দিষ্ট কাউন্টারে জমা দেওয়ার পর সেখান থেকে প্রাপ্তি স্বীকারপত্র (প্রাপ্তি নম্বরসংবলিত) দেওয়া হয়। এতে সংশোধিত জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার তারিখ উল্লেখ থাকবে। এই তারিখের সাত দিনের মধ্যে কাউন্টার থেকে সংশোধিত পরিচয়পত্র নিতে হবে।

নাম সংশোধনঃ কেউ পরিচয়পত্রে থাকা নিজের নাম, পিতা, স্বামী কিংবা মাতার নাম সংশোধন করতে চাইলে তাকে আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে-

১। এসএসসি বা সমমান সনদ
২। নাগরিকত্ব সনদ
৩। জন্মনিবন্ধন সনদ
৪। চাকরির প্রমাণপত্র
৫। পাসপোর্ট
৬। নিকাহনামা
৭। পিতা, স্বামী কিংবা মাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি।

আবেদনপত্রের সঙ্গে সংযুক্ত এসব নথি অবশ্যই সত্যায়িত হতে হবে। এ ক্ষেত্রে উল্লেখ করা নথির যার যেটি আছে, শুধু সেটি দিলেই চলবে। যেমন, যার শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসির কম, তাকে এসএসসি বা সমমানের সনদের ফটোকপি জমা দিতে হবে না। আবার কেউ যদি চাকরি না করেন, তাকে চাকরির প্রমাণপত্র দিতে হবে না। আবার
পাসপোর্ট না থাকলে তা দেয়ার দরকার নেই।

নাম পরিবর্তনঃ
জাতীয় পরিচয়পত্রে নিজের নাম বদল করতে হলে আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে এসএসসি বা সমমানের সনদের সত্যায়িত ফটোকপি (শিক্ষাগত যোগ্যতা এর নিচে হলে দেয়ার দরকার নেই), বিবাহিত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে স্ত্রী বা স্বামীর জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি, ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে সম্পাদিত এফিডেভিট এবং জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত নাম পরিবর্তনসংক্রান্ত বিজ্ঞাপনের কপি। নাম পরিবর্তনের জন্য প্রার্থীকে শুনানির দিন প্রকল্পের কার্যালয়ে কাগজপত্রের মূল কপিসহ হাজির হতে হবে।

স্বামীর নাম সংযোজন বা বাদ দেওয়াঃ
বিয়ের পর কেউ জাতীয় পরিচয়পত্রে স্বামীর নাম যুক্ত করতে চাইলে তাকে কাবিননামা ও স্বামীর জাতীয় পরিচয়পত্র আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে। আর বিবাহবিচ্ছেদের কারণে স্বামীর নাম বাদ দিতে চাইলে
আবেদনকারীকে তালাকনামার সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে।

পিতা বা মাতার নাম পরিবর্তনঃ
পিতা বা মাতার নাম পরিবর্তন করতে হলে আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে এসএসসি বা এইচএসসি বা সমমান
পরীক্ষার সনদ অথবা রেজিস্ট্রেশন কার্ড। পিতা বা মাতার পরিচয়পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি। পিতা বা মাতা বা উভয়ে মৃত হলে দিতে হবে ভাই বা বোনের পরিচয়পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি। পিতা-মাতার নাম পরিবর্তনের ক্ষেত্রে
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা আবেদনকারীর সাক্ষাৎকার নিতে পারেন।

জন্মতারিখ সংশোধনঃ
যাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি বা সমমানের, তাদের আবেদনপত্রের সঙ্গে এসএসসি বা সমমানের সনদের সত্যায়িত ফটোকপি জমা দিতে হবে। বয়সের পার্থক্য অস্বাভাবিক না হলে প্রাপ্তি স্বীকারপত্রে উল্লেখ করা তারিখে সংশোধিত পরিচয়পত্র বিতরণ করা হয়। অস্বাভাবিক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সনদের মূল কপি প্রদর্শন কিংবা ব্যক্তিগত শুনানিতে অংশ নিতে হতে পারে। যাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি বা সমমানের কম, তাদের জন্মতারিখ সংশোধনের জন্য আবেদনপত্রের সঙ্গে
জমা দিতে হবে জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়ার আগের তারিখে পাওয়া সার্ভিস বুক বা এমপিওর কপি, ড্রাইভিং
লাইসেন্স, জন্ম সদন, নিকাহনামা, পাসপোর্টের কপি প্রভৃতি। এ ক্ষেত্রে প্রকল্প কার্যালয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা
বা প্রকল্প পরিচালক আবেদনকারীর সাক্ষাৎকার নিয়ে থাকেন। এ ছাড়া দরকার হলে সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কর্মকর্তার মাধ্যমে সরেজমিনে তদন্ত করা হয়।

ঠিকানা সংশোধনঃ
জাতীয় পরিচয়পত্রে থাকা বর্তমান
ঠিকানা ও ভোটার এলাকা বদল করার
সুযোগ আছে। তবে সারা বছর সেই সুযোগ
মেলে না। এটা শুধু ভোটার তালিকা
হালনাগাদ করার সময় করা যাবে।
বর্তমানে হালনাগাদ করার কাজটি করা
হয় শুধু জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে।
সারা বছর ভোটার এলাকা বদলের সুযোগ
থাকে না কেন, জানতে চাইলে প্রকল্পের
কমিউনিকেশন অফিসার দেবাশীষ কুণ্ডু
বলেন, ‘আমাদের দেশে ইউনিয়ন পরিষদ,
পৌরসভা, উপজেলা, সিটি করপোরেশন ও
জাতীয় সংসদ নির্বাচন ভিন্ন ভিন্ন সময়ে
হয়। দেখা যায়, একই বছর একাধিক
নির্বাচন হয়। একই বছরে কেউ যাতে
ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি
করপোরেশন নির্বাচনে ভোট দিতে না
পারেন, তাই সারা বছর ভোটার এলাকা
বদলের সুযোগ দেওয়া হয় না।’ হালনাগাদ
করার সময় ভোটার এলাকা বদল করতে হলে
নতুন ঠিকানার উপজেলা বা থানা
নির্বাচন অফিস থেকে দেওয়া ফরম-১৩
অথবা ফরম-১৪ পূরণ করে উপজেলা বা
থানা নির্বাচন অফিসে আবেদন করতে
হবে। তবে ঠিকানা পরিবর্তন না করে
সংশোধন (বানান, বাড়ির নম্বর, সড়ক নম্বর
ভুল থাকলে) করার সুযোগ ঢাকার প্রকল্প
কার্যালয়ে রয়েছে।এ ছাড়া স্থায়ী
ঠিকানা পরিবর্তন বা এর কোনো তথ্য
সংশোধনেরও সুযোগ আছে। ঠিকানার
ছোটখাটো ভুল সংশোধন বা স্থায়ী
ঠিকানা পরিবর্তনের সুযোগ সারা বছরই
থাকে। এ জন্য আবেদনপত্রের সঙ্গে
প্রকল্প কার্যালয়ের নির্দিষ্ট কাউন্টারে
জমা দিতে হবে পরিবারের কোনো
সদস্যের পরিচয়পত্রের কপি, গ্যাস, বিদ্যুৎ,
টেলিফোন বিলের যেকোনো একটির
কপি বা কর দেওয়ার কপি। আরও জমা
দিতে হবে চেয়ারম্যান বা ওয়ার্ড
কাউন্সিলরের প্রত্যয়নপত্র। স্থায়ী
ঠিকানা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ওই
ঠিকানায় নিজের নামে বা পিতা বা
মাতার নামে থাকা জমি বা ফ্ল্যাটের
দলিলের সত্যায়িত ফটোকপিও জমা
দিতে হবে।

হালনাগাদ কর্মসূচির পরিচয়পত্র সংশোধনঃ
২০০৯ সালে হালনাগাদ কর্মসূচির সময় যাদের নাম ভোটার তালিকায় যুক্ত হয়েছে, তাদের জাতীয় পরিচয়পত্রে কোনো ভুল থাকলে বা হারিয়ে গেলে তাদের ২০১০ সালের ডিসেম্বরের পর প্রকল্প কার্যালয়ে যোগাযোগ করতে হবে।
Best Java, Android Games, Apps

পরিচয়পত্র হারিয়ে গেলেঃ
পরিচয়পত্র হারিয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট থানায় ভোটার নম্বর বা আইডি নম্বর উল্লেখ করে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে হবে। এরপর জিডির মূল কপিসহ প্রকল্প কার্যালয় থেকে নেওয়া ছকের আবেদনপত্র নির্দিষ্ট কাউন্টারে জমা দিয়ে প্রাপ্তি স্বীকারপত্র নিতে হবে। প্রাপ্তি স্বীকারপত্রে উল্লেখ করা তারিখে ডুপ্লিকেট পরিচয়পত্র বিতরণ করা হয়।

নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র পেতে হলেঃ
বাংলাদেশে কারও বয়স ১৮ বছর হলেই
কেবল তিনি ভোটার তালিকায় নাম
ওঠাতে পারবেন। দেশের প্রতিটি
উপজেলায় সার্ভার স্টেশন তৈরির
প্রক্রিয়া চলছে। এসব স্টেশনে ভোটার
তালিকা তৈরি ও বিতরণের কাজ করা
হবে। এগুলোয় কার্যক্রম শুরু হলে যখন যার
বয়স ১৮ বছর হবে, তখন তিনি ভোটার
তালিকায় নাম ওঠাতে পারবেন। এখন ১৮
বছর পূর্ণ হওয়া মাত্রই জাতীয় পরিচয়পত্র
তৈরির সুযোগ থাকছে তাদেরই, যাদের
চিকিৎসা, পড়াশোনা বা কাজের জন্য
বিদেশে যেতে হবে। এ জাতীয় কোনো
প্রয়োজনীয়তার প্রমাণ দেখাতে হবে।


যোগাযোগঃ
ভোটার তালিকাসংক্রান্ত বিস্তারিত
তথ্য জানতে হলে যোগাযোগ করতে হবে
ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন এবং
জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানে সহায়তা
প্রদান প্রকল্পের আগারগাঁওয়ের ইসলামিক
ফাউন্ডেশন ভবনের সপ্তম তলার
কার্যালয়ে।


0 comments:

Post a Comment

Popular Posts

Recent Posts

Unordered List

Pages

পরিসংখ্যান

সর্বশেষ

মন্তব্য

Top Sites

No Now